এশিয়া মহাদেশের মধ্য দক্ষিণে অবস্থিত ভারতবর্ষ পৃথিবীর বৃহত্তম উপমহাদেশ। বিশাল আয়তন, বিপুল জনসংখ্যা, বৈচিত্রময় সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের বৈচিত্রের দরুন একে উপমহাদেশ আখ্যা দেয়া হয়। জনশ্রুতি আছে যে, প্রাচীনকালে এ অঞ্চলের একজন শাসনকর্তা ছিলেন রাজা ভরত। তার নামানুসারেই এর নামকরণ করা হয় ভারত। অনেকের মতে সিন্ধু নদ কে গ্রীকরা বলত ইন্ডাস। আর ঐ ইন্ডাস থেকেই ইন্ডিয়া নামের উৎপত্তি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের আধিক্য হেতু মধ্যযুগের মুসলিম লেখকরা একে হিন্দুস্তান বলে অভিহিত করেন। ভারত, ইন্ডিয়া বা হিন্দুস্তান সব নামেই এই উপমহাদেশটি পরিচিত। ভারতবর্ষের উত্তর, উত্তর-পশ্চিম, উত্তর-পূর্বে হিমালয়। দক্ষিণে ভারত মহাসাগর, পূর্বে ব্রহ্মদেশ বা মায়ানমার এবং পশ্চিমে পারস্য (ইরান) ও আরব সাগর অবস্থিত। এ অঞ্চলের প্রাচীনতম অধিবাসী হল দ্রাবিড় (উৎধারফ) জাতি। কালক্রমে আর্য, শক, কুষান, হুন গন এখানে বসতি স্থাপন করে। এ ভারতবর্ষে বহু জাতি, বহু ধর্ম, বহু ভাষাভাষী মানুষের সমাগম। এক সাথে এত বৈচিত্র পৃথিবীতে বিরল। এ অঞ্চলে হিন্দু (সনাতন) ধর্ম ও ইসলাম ধর্মের আধিক্য থাকলেও বিপুল পরিমানে বৌদ্ধ, ক্রিশ্চান, শিখ, জৈন, অগ্নি উপাসক সহ অন্যান্য অনেক ধর্মের অনুগামী বর্তমান। ভারতবর্ষে দুই’শর অধিক উপভাষা (উরধষবপঃ) প্রচলিত আছে। কাল বিভাজন অনুযায়ী ভারত বর্ষে
- প্রাচীন যুগ- মুসলীম বিজয়ের পূর্বে ভারতের বৌদ্ধ ও হিন্দুদের শাসন
- মধ্যযুগ- সিন্ধু ও মুলতান বিজয়ের পর থেকে মুঘল শাসনের শেষার্ধ
- আধুনিক যুগ- ১৭৫৭ সাল থেকে আজ পর্যন্ত সময়কে বিবেচনা করা হয়।
১৯৪৭ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্ট ভারত উপমহাদেশ ভেঙ্গে দুটি স্বতন্ত্র দেশ (পাকিস্তান ও ভারত) এবং ১৯৭১ সালে পাকিস্তান ভেঙ্গে দুটি স্বাধীন দেশ (বাংলাদেশ ও পাকিস্তান) সৃষ্টি হয়। যদিও আজ ভারত বর্ষের বুক চীরে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া বয়ে গেছে, তথাপি ও বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান দেশ ত্রয়কে একত্রে আজো ভারত উপমহাদেশ বলে আখ্যা দেয়া হয়।
- আশরাফুল ইসলাম সায়ান।
No comments:
Post a Comment